রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৪ অপরাহ্ন
পিরোজপুর প্রতিনিধি॥ পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় সাফা ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বিনয় কৃষ্ণ বল অফিস সহকারীর হাতে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন।
সোমবার (১৬ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে কলেজের অফিস কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত অফিস সহকারী ফরিদা ইয়াসমিন ধানিসাফা এলাকার আলম বেপারীর স্ত্রী।
জানা গেছে, উপজেলার সাফা ডিগ্রি কলেজের অফিস সহকারী ফরিদা ইয়াসমিন কলেজের কোনো নিয়ম কানুন মানেন না। তার কাছে নিয়ম বলতে সবই মনগড়া। মন চাইলে অফিস করেন আর মন না চাইলে অফিসে আসেন না।
এমনকি জাতীয় শোক দিবসেও কলেজে আসেননি তিনি। এর কোনো জবাবদিহিতা করতে পারেন না অধ্যক্ষ। স্থানীয় ও প্রভাবশালী হওয়ায় ফরিদা ইয়াসমিন প্রায় সময়ই বলেন-আমি অধ্যক্ষের কথা শুনতে বাধ্য নয়।
ঘটনার দিন ভারপ্রাপ্ত এই অধ্যক্ষ সরকার নির্ধারিত এসাইনমেন্ট সংক্রান্ত কাজে কলেজে যান। সকল শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠানে আসার জন্য আগের দিনই অবগত করেন। অবগত হয়ে শিক্ষার্থীরা এসাইনমেন্ট জমা দিতে আসে। অফিস সহকারীকে এসাইনমেন্ট জমা দেওয়া শিক্ষার্থীদের নাম রেজিস্ট্রার খাতায় লিখে রাখতে বলেন। কিন্তু অফিস সহকারী এতে কোনো কর্ণপাত করেনি।
সকাল ১০ টা ২৮ মিনিটে অধ্যক্ষ রেজিস্ট্রার খাতা নিয়ে অফিস সহকারীর টেবিলে যান। এ সময় ১০/১২ জন শিক্ষার্থী ও স্টাফদের উপস্থিতিতে অভিযুক্ত অফিস সহকারী ফরিদা ইয়াসমিন পায়ের জুতা খুলে অধ্যক্ষকে বেধড়ক পেটাতে শুরু করেন। শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষকে দ্রুত উদ্ধার করেন। আহত অধ্যক্ষ মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন।
অফিস সহকারী ফরিদা ইয়াসমিন এ ঘটনায় সাংবাদিকদের কোন তথ্য না দিয়ে কলেজ ত্যাগ করেন। তার সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে আগামীকাল কলেজে এসে তথ্য দিবেন বলে জানান।
সাফা ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী নুরুন্নাহার বলেন, প্রিন্সিপাল স্যার এসাইনমেন্ট জমা দেওয়া শিক্ষার্থীদের নাম রেজিস্ট্রার খাতায় এন্ট্রি করতে বলেন। কিন্তু অফিস সহকারী ম্যাম এতে অপরাগতা প্রকাশ করে হঠাৎ কিছু বুঝে ওঠার আগেই পায়ের জুতা খুলে স্যারকে পিটানো শুরু করেন। আমরা স্যারকে উদ্ধার করি।
প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুর রহমানের সাথে এ বিষয়ে একাধিকবার ফোন দিয়েও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অ.দা.) বশির আহমেদ জানান, এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য আমরা মর্মাহত। ভুক্তভোগী অধ্যক্ষ আইনের আশ্রয় নিলে আমরা সার্বিক সহযোগিতা করব।
ভারপ্রাপ্ত উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ইদ্রিস আলী আজিজি জানান, এ ধরনের ঘটনা শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য হুমকিস্বরূপ। অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply